মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫

বৃদ্ধাশ্রম থেকে ছেলের কাছে অসহায় বাবার চিঠি


প্রিয় সোনামানিক,
তুমি কেমন আছ একথা জিজ্ঞাসা করা সম্পূর্ণ নিরর্থক মনে করছি। তুমি ভাবছ হয়ত তোমার বাবা আগের মত তোমায় ভালোবাসে না। যদি এটা ভেবে থাক তবে তোমার সেই ছোট্টবেলার মত আরেকটি ভুল করলে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি তুমি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো আছ কেননা আমরা দোয়া যার সাথে সর্বদা জড়িয়ে থাকে সে খারাপ থাকতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করিনা। আমরা বউমা এবং প্রিয় দাদুভাইয়েরাও ভালো আছে বলে বিশ্বাস। আমি কোন মেয়ের বাবা হতে না পারলেও তোমাকে বিবাহ দিয়ে যে লক্ষ্মী বউমাকে পেয়েছিলাম তাকে কোনভাবেই কষ্ট দিবে না। লক্ষ্মী মেয়েটি আমার মেয়ের শুণ্যস্থান পুর্ণ করে দিয়েছে! আমার নাতী-নাতনীদের অনেক অনেক আদর দিও এবং তাদের কোন চাওয়া অপূর্ণ রাখবে না। তোমার হতভাগ্য-হতদরিদ্র জন্মদাতা তোমার চাহিদা তো দূরের কথা মৌলিক চাহিদাও সম্পূর্ণভাবে পূর্ণ করতে পারেনি কিন্তু তুমি তো গরীব নও। সুতরাং ছেলে-মেয়ের কোন শখ যেন অপূর্ণ না থাকে। তোমাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। পাশের রুমের গণি মিয়া আমার সূখ দেখে ঈর্ষা করে কেননা তুমি প্রতি বছর দু’ইবার আমার কাছে ছুটে আস। তোমার ব্যস্ততা রেখে তোমাকে আসতে বারবার নিষেধ করি তারপরও তুমি কেন আস তা আমি বুঝতে পারি না। এটা ভেবোনা যে, তুমি না আসলে আমি তোমায় ভুলে যাব কিংবা কম দোয়া করবো বরং তোমাদের প্রতি দোয়ার পরিমাণ দিন দিন বাড়তেই থাকবে। কেননা দিন দিন যেভাবে অক্ষম হয়ে যাচ্ছি তাতে আমার পৃথিবীটা সংকুচিত হতে হতে আমার এক চোখ ভাঙা চশমাটির মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফসুস বেচারা গণি মিঞার জন্য! ওর সন্তানগুলো ওকে এখানে রেখে যাওয়ার পর একবারও খোঁজ নেয়নি; শুধু টাকা পাঠানো ছাড়া। 

প্রিয় পুত্রধন! জীবন সায়াহ্নে এসে বারবার অনুশোচনা হচ্ছে। মনে হচ্ছে, কোথাও যেন আমি চরম ভুল করেছি। তোমাকে লালন-পালন করতে গিয়ে কোথায় যেন আমি আমার দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারিনি। তোমার মা আর আমি তোমাকে বাইরে রেখে জীবনের কোন পরিকল্পনা সাজাই নি অথচ আজ যেন নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। তোমার কাছে হয়ত এটাই আমার শেষ চিঠি তাই কিছু কথা বলে যাওয়া আবশ্যক। এত তাড়াতাড়ি মরে যাবো সেটা মনে হচ্ছে না কেননা আমি চাইলেই তো আর মৃত্যু আমাকে ধরা দেবে না কিন্তু লিখতে বসলে চোখ যেভাবে ঝাপসা হয়ে আসে, হাত যেভাবে কাঁপতে শুরু করে কিংবা মস্তিষ্ক যেভাবে আমার বিরুদ্ধাচারণ করে তাতে তোমাকে আর লিখতে পারবো বলে মনে হয়না। তাই জীবনের শেষ কথাগুলো আজকেই বলে দিব। ভেবোনা, আমি তোমাকে কৈফিয়তের কাঠগোড়ায় দাঁড় করাবো। মরন সমুদ্রের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে, সন্তান হিসেব তুমি ‍সুসন্তানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও আমি পিতা হিসেবে মোটেও সফল নই। বৃদ্ধাশ্র্রম নিয়ে সমাজে বহু ধরণের খারাপ কথা প্রচলিত থাকলেও আমি সেটা মনে করিনা। তুমি আমাকে জোড় করে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাও নি বরং আমিই তোমার চোখের জলের বিরুদ্ধাচারণ করে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। আব্বু, তোমার হয়ত মনে নাই কিন্তু শুধু তোমার লেখাপড়ায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেই কথা ভেবে আমার পক্ষের প্রায় সকল আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক শিথিল করে ফেলেছিলাম। তোমার মা তোমার নানা-নানীর একমাত্র মেয়ে হয়েও তাদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল শুধু তোমার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চিন্তায়। আমি এবং তোমার মা-আমাদের উদ্দেশ্যে সফল হয়েছি। দেশের মাত্র কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম যদি উচ্চারিত হয় তবে সেখানে আমাদের সোনমানিকের নামটিও উচ্চারিত হয়। এটা কি আমাদের কম আনন্দের-কম পাওয়া। এত হিসেব করে তোমাকে মানুষের মত মানুষ করা এই বৃদ্ধ যদি আজ আমার দাদুভাইদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অন্তরায় ঘটায় তবে সেটা বেমানান বটে!

এখানে যে ছেলেটা আমাদের দেখাশুনা করে সে ছেলেটার মত ছেলে খুব কম দেখা যায়। ওর সম্পর্কে বললে তোমার মনে হবে এই জগতেও এমন বোকা ছেলে আছে! সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা কিংবা গভীর রাতে মিষ্টি হেসে জিজ্ঞাসা করে, কাকা! কিছু লাগবে? ওর আচরণে তোমার অনুপস্থিতিতে বুকের মধ্যের শূন্যতা কেমন যেন পূণ্য হয়ে যায়। ছেলেটা খুব গরীব। দিনরাত পরিশ্রম করে এখান থেকে যা মাইনে পায় তা দিয়েই ওর বাবা-মা এবং স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চলতে হয়। আমি মনোযোগ দিয়ে ওর কষ্টের কথা শুনি; আমার মত অক্ষম-অলসের এর বাইরে তো আর কোন কাজ থাকে না। আমার ইচ্ছা হয় ওকে কিছু বাড়তি টাকা দেই। কিন্তু আমার সে সাধ্য তো নাই। ছেলেটাকে বলেছিলাম ওর বাবা-মাকে এই বৃদ্ধাশ্রমে নিয়ে আসতে। এ কথাশুনে ছেলেটা হাউমাউ করে কেঁদে দিয়ে বলেছে, রক্ত বিক্রি করে হলেও বাবা-মাকে নিজের কাছে রাখবে; কোনদিন বৃদ্ধাশ্রমে দিবে না। ছেলেটার কথা শুনে ভেতরটা হঠাৎ মুচড়ে গিয়েছিল কিন্তু ক্ষণিক পরেই বুঝলাম আমি হয়ত আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছি! তাই এ নিয়ে আর ও ছেলেটার কাছে কিছু বলতে যাইনি। অল্পশিক্ষিত একটি ছেলে তার বাবা-মাকে নিয়ে যা ভাবছে সেটা কেবল আবেগের কথা! তোমরা যারা উচ্চশিক্ষিত তারা আবেগকে প্রশ্রয় দিবে কেন?

আব্বু! আগামী বার আমাকে যদি দেখতে আসো তবে আমার কলিজারটুকরো প্রাণপ্রিয় দাদুভাইদের নিয়ে  এসো। আমি দেখতে চেয়েছি শুনলে ওরা আসতে চাইবে। বউমাকে এতদূর আনার দরকার নাই। মামনী আমার গরম সহ্য করতে পারে না। জানি দাদুভাইদেরও কষ্ট হবে। কিন্তু জীবনে এই শেষবার। আর কোনদিন ওদের দেখতে চাইবো না বলে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না কেননা দিন যত সামনে এগুচ্ছে ততোই আমার আচরণগুলো শিশুদের মত হয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে যদি কখনো দাদুভাই কিংবা বউমাকে দেখতে চাই তবে সেটা আমার শিশু সূলভ খামখেয়ালী ভেবে মূল্যায়নের বাইরে রেখো। আসার সময় বাসা থেকে কিছু রেঁধে আনবে না। এখানে যে খাবার দেয় তার তুলনায় বাসার খাবারগুলো অনেক খারাপ!


অনেক কথাই লেখার ছিল কিন্তু আর কিছুই লিখতে পারলাম না। কোথা থেকে একটা অন্ধ পোকা এসে আমার চোখের মধ্যে ঢুকে পড়লো! কিছুটা যন্ত্রনাও হচ্ছে বটে। অক্ষমবাবাকে ক্ষমা করো। তোমার সন্তানদের জন্য তুমি যেন আমার মত অক্ষম বাবা না হও তার চেষ্টা করো। কয়েকদিন হল তোমার মা আমায় খুব জ্বালাচ্ছে। তাকে হারানোর ১৫ বছর পর এমনটা কেন ঘটছে তা বুঝতে পারছি না। স্বপ্নে সে কেবল ডেকেই যাচ্ছে। আমার আরও অনেকদিন বাঁচতে ইচ্ছা করে এবং বৃদ্ধাশ্রমের খালি ঘরগুলোতে কারা আমার বন্ধু হয় তা দেখতে সাধ হয় কিন্তু সে সৌভাগ্য আমার হবে না বোধহয়! আমি মারা যাওয়ার পর, তোর মায়ের পাশেই আমাকে কবর দিও। এতে কিছুটা যায়গা নষ্ট হবে ঠিক কিন্তু তোমার মাকে ছেড়ে আমি দূরে থাকতে পারবো না। আমার এ আব্দারটুকু রেখো। রাখবে তো? আমায় ক্ষমা করে দিও।
তোমার অক্ষম জন্মদাতা
নতুনপল্লী বৃদ্ধাশ্রম।

শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বিশ্বের ঘুম ভাঙাল নিথর আয়লান

বিশ্বের ঘুম ভাঙাল নিথর আয়লান

বিশ্বের ঘুম ভাঙাল নিথর আয়লান

সিরিয়ার শিশু আয়লানের নিষ্প্রাণ শরীরটি এভাবেই ভেসে এসেছিল তুরস্কের একটি সৈকতে। বিশ্ববিবেককে প্রচণ্ড নাড়া দিয়েছে ছবিটি। বালু দিয়ে ভাস্কর্য বানিয়ে মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ফুটিয়ে তুলেছেন সুপরিচিত ভারতীয় শিল্পী সুদর্শন পট্টনায়েক। ভাস্কর্যের পাশে তিনি লিখেছেন, ‘ভেসে যাওয়া মানবতা...লজ্জা লজ্জা লজ্জা’।  ওডিশা রাজ্যের পুরী সৈকত থেকে গতকাল তোলা ছবি l এএফপি‘আমার সন্তানেরা ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শিশু। ওরা প্রতিদিন আমার ঘুম ভাঙাত। খেলা করত আমার সঙ্গে। এর চেয়ে সুন্দর মুহূর্ত আর কী হতে পারে? এ সবকিছুই হারিয়ে গেছে।’
শোকার্ত এই উচ্চারণ সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির বাবা আবদুল্লাহ কুর্দির। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হারানোর পর আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। তুরস্ক থেকে নিজ দেশ যুদ্ধপীড়িত সিরিয়ার কোবানিতে ফিরে তিনি গতকাল শুক্রবার দাফন করেছেন প্রিয়জনদের।
গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়া থেকে এই কুর্দি পরিবারটি আশ্রয় নিয়েছিল তুরস্কে। বুধবার তুরস্ক থেকে নৌকায় চেপে গ্রিস যাওয়ার চেষ্টা করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় আবদুল্লাহর পরিবার। নৌকা ডুবে গেলে তাঁর হাত ফসকেই সাগরের ঢেউয়ে তলিয়ে যায় দুই ছেলে—তিন বছর বয়সী আয়লান আর পাঁচ বছর বয়সী গালিব। ভূমধ্যসাগর কেড়ে নিয়েছে ওদের মা রেহানাকেও।
তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের ছোট নিথর দেহের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বড় ধরনের ঝাঁকুনি খায় অভিবাসী-সংকট নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ইউরোপ। ঘুম ভাঙে বিশ্ববাসীরও। সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগের অনলাইন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আয়লানের ছবিটি অনেকখানি পাল্টে দিয়েছে জনমত। সাম্প্রতিক শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ইউরোপের যে নেতারা এত দিন নির্লিপ্ত ছিলেন, তাঁরাও এখন মানবিক উদ্যোগের পথে এগোনোর কথা বলছেন। অন্তত দুই লাখ অভিবাসীকে গ্রহণ করতে ইউরোপকে অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ।
শিশু আয়লানের মরদেহ দুর্ঘটনার দিনই তুরস্কের আরেকটি সৈকতে ভেসে আসে। এর ১০০ মিটার দূরে পড়ে ছিল তার ভাই গালিবের মরদেহ। মায়ের মরদেহ পাওয়া গিয়েছে কাছের আরেকটি সৈকতে। তুরস্কের পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
দুই ছেলে আয়লান (বাঁয়ে) ও গালিবের হাত ধরে বাবা আবদুল্লাহ কুর্দি। নতুন নিশ্চিন্ত জীবনের স্বপ্ন নিয়ে স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে সিরিয়া ছেড়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন আবদুল্লাহ। পথে নৌকাডুবিতে সবাইকে হারিয়েছেন তিনি l ছবি: এএফপিবিপজ্জনক উপায়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে এ বছর আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারালেও আয়লানের ছবিটি আলাদাভাবে মর্মস্পর্শ করেছে বিশ্ববাসীর। ইতিমধ্যে কার্যত শরণার্থীদের বিপন্নতা আর মরিয়া অবস্থার প্রতীকে পরিণত হওয়া ছবিটিতে দেখা যায়, সৈকতের বালুতে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে আয়লান। তার পরনে লাল জামা, নীল শর্ট প্যান্ট, পায়ে হালকা জুতা।
আলোচিত ছবিটি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হয়। এতে রাজনীতিক ও জনসাধারণ—উভয়ের মধ্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হয়। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ভালস টুইটারে লেখেন, ‘ইউরোপকে সংহত করতে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে তৎপর হতে হবে।’
ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফ্রান্স ও জার্মানি দ্বিধাদ্বন্দ্ব বাদ দিয়ে একমত হয় যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উচিত, নির্ধারিত সংখ্যা (কোটা) অনুযায়ী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জায়গা দিতে সদস্যদেশগুলোকে বাধ্য করা। শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও আয়লানের ছবিটি দেখে ‘গভীরভাবে প্রভাবিত’ হয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ কয়েক হাজার সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে।
আনুষ্ঠানিক পোশাকে আয়লানআয়লানের হৃদয়বিদারক ছবিটি প্রকাশের পর শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহের পরিমাণও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) গত দুই দিনে সারা বিশ্ব থেকে এক লাখ ডলার সহায়তা পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিও সিরিয়া ও ইরাকের শরণার্থীদের জন্য জরুরি তহবিল সংগ্রহ শুরু করার পর অভাবনীয় সাড়া পেয়েছে।
ছবিটির আলোকচিত্রী তুর্কি সাংবাদিক নিলুফার দেমির বলেন, ‘যখন বুঝতে পারলাম ছেলেটাকে বাঁচানোর কোনো উপায়ই নেই—মনে হলো, ওর ছবি তুলি...বেদনাদায়ক ঘটনাটা দেখুক সবাই। আশা করি, এই ছবি যে ধাক্কা দিয়েছে, তা চলমান সংকট সমাধানে সহায়ক হবে।’
আবদুল্লাহর কাহিনি: কুর্দি পরিবারটি সিরিয়ার কোবানি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ইউরোপ হয়ে কানাডা যেতে চেয়েছিলেন আবদুল্লাহ। সেখানে তাঁর বোন টিমা কেশবিন্যাসের কাজ করেন।
দাফনের সময় আয়লানের বাবাতবে সব হারানো আবদুল্লাহ এখন দেশ ছাড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে প্রাণপ্রিয় স্ত্রী-সন্তানের কবরের কাছেই শান্তি খুঁজতে চান, গতকাল জানালেন তাঁর চাচা সুলেমান কুর্দি।
মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কুর্দি সম্প্রদায়ের মানুষেরা অন্যায়-অবিচার ও উপেক্ষার শিকার। এর মধ্যে সিরিয়ার সরকার বহু বছর ধরেই তাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত সে দেশের কুর্দিরা রাজধানী দামেস্কেই থাকত। একপর্যায়ে তারা উত্তরাঞ্চলীয় শহর কোবানির কাছাকাছি মাখারজি এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে কোবানিতে কুর্দি বাহিনী ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের লড়াই শুরু হলে স্থানীয় বহু পরিবার তুরস্কে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষ কুর্দি শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয় দেয়। তবে স্থায়ী আশ্রয়ের খোঁজে কুর্দিরা ইউরোপসহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি

বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫

৩১১৬ বছরেও ফেরাওন এর লাশ পঁচে নি কেনো??

কোরআনে আছে ফেরাউন ডুবে
মারা গেছে আর মৃত্যুর পরও তার
শরীর অক্ষত রাখা হবে, পরবর্তি
সীমালংঘনকারীদের জন্য
সতর্কবার্তা হিসেবে।
"বনী ইসরাইলকে আমি পার
করে দিয়েছি নদী, অত:পর
তাদের পশ্চাদ্ভাবন করেছে
ফেরাউন ও তার
সেনাবাহিনী, দুরাচার ও
বাড়াবাড়ির উদ্ধেশ্যে,
এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ
করলো, তখন বলল, এবার বিশ্বাস
করে নিচ্ছি কোন মাবুদ নেই

মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০১৫

অভিনব আম চাষ!

অভিনব আম চাষ!
পোকা দমনের জন্য বিষ নয়, পাতা হয়েছে ফাঁদ। ছবি: প্রথম আলোআমে ফরমালিন আর কার্বাইডের ব্যবহার নিয়ে দেশে যখন ব্যাপক হইচই হচ্ছে, এর নেতিবাচক প্রচারের অনেক ভোক্তা সুস্বাদু এই মৌসুমি ফল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ব্যবসায়ীরাও মাঠে নেমেছেন কম। আমের বাজারে চলছে ব্যাপক মন্দা। এই সময়ে শাহ কৃষি জাদুঘর এবার ফরমালিন-কার্বাইড তো দূরের কথা, কোনো কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই আম উৎপাদনের সক্ষম হয়েছে।
এক হেক্টর আয়তনের এই বাগানে এবার পরীক্ষামূলক পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ টন আম হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে আম চাষে ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
শাহ কৃষিতথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর শাহ রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক। তিনি তাঁর নিজ গ্রাম নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিগ্রামে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। বেসরকারি পর্যায়ে এটি বাংলাদেশের একমাত্র কৃষি জাদুঘর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পরিবেশবান্ধব কৃষি আন্দোলন করে আসছেন। এখানে কৃষকদের বিনা মূল্যে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
কয়েক বছর ধরে জাহাঙ্গীর শাহ তাঁর নিজের এক হেক্টর আয়তনের একটি আমবাগানে রাসায়নিকমুক্ত আম ফলানোর চেষ্টা করে আসছেন। এই কাজ করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে তিনি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তারপরও তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তিনি আমকে রাসায়নিকমুক্তভাবে উৎপাদন করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত একটা লড়াই চালিয়েছেন। এবার তিনি এই কাজে প্রায় সফল হয়েছেন।
জাহাঙ্গীর শাহর পদ্ধতিতে আমে সরাসরি কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। পোকা দমনের জন্য কীটনাশকের পরিবর্তে সেক্সফেরোমন ফাঁদ, বিষটোপ ও অ্যান্টিফিডেন্ট ব্যবহার করে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা দমন করেছেন। এভাবেই তিনি সফল হয়েছেন।

দেশি মুরগি

দেশি মুরগি
.গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে যায় বজলুল হক। বিরক্তিতে চেহারাটা এমন হয়, যেন নিম চটকে তার জিবে লাগানো হয়েছে। ঘরে পা দিয়ে মনটা অবশ্য ভালো হয়ে যায় বজলুর। ম-ম খিচুড়ির সৌরভ। বৃষ্টির দিনে এই না হলে চলে! গিন্নি ছুটে এসে বলে, ‘যাও, শিগগির একটা দেশি মুরগি নিয়ে এসো। তোমাদের আজ খিচুড়ি-মাংস খাওয়াব।’
অফিস থেকে এভাবে পালক ঝরা কাউয়ার মতো ফিরে এখনই আবার মুরগি আনতে যাওয়া! আহ্, আগের সেই দিনগুলো যে কোথায় হারাল!
দেশি মুরগির কথায় দমে যায় বজলু। আজকাল সে রকম দেশি মুরগি পাওয়া দায়। আর পেলেই-বা কী, কপালে সয় না। এই তো দুই মাস আগে অফিসের পিয়ন ইদ্রিসকে দিয়ে তার গ্রাম থেকে এক জোড়া দেশি মুরগি আনিয়েছিল বজলু। হৃষ্টচিত্তে বাড়ি ফিরে দেখে সদ্য বিয়ে করা ভাতিজি আর জামাই হাজির। সঙ্গে আবার দেবর-ননদ। তারা যাই যাই করছিল, তেজি গলায় কক্ কক্ করতে থাকা মুরগি দুটো দেখেই বোধ হয় থেকে গেল। উফ্, চারটি রানই হাতছাড়া হয়ে গেল রে!
বজলুর নীরবতায় গিন্নির কপালে ভাঁজ পড়ে। এটা তুফানের তিন নম্বর সংকেত। গিন্নি কথায় খানিকটা ঝাঁজ মিশিয়ে বলে, ‘কী ব্যাপার, গা করছ না যে!’
বজলু তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বলে, ‘ইফতারটা করেই যাই।’
এ কথায় ছাড় পেয়ে যায় বজলু। গিন্নি বলে, ‘ঘুরে-ফিরে আবার ব্রয়লার নিয়ে এসো না। এসব বাচ্চাদের আর খাওয়াব না।’
ইফতার সেরে আরও খানিকটা সময় আলসেমিতে পার করে দেশি মুরগি কিনতে বেরোয় বজলু। বাসার অদূরে কাঁচাবাজারে মুরগি নেই। খাঁচা সব খালি। ঝিমোতে থাকা এক মুরগিওয়ালা গলা টান করে বলে, ‘বিষ্টিতে মুরগার সাপ্লাই নাই। দিতাম কইথন?’
পাতলা বর্ষায় কালো মেঘ দেখে বজলু। বাজারে দেশি মুরগি নেই—বাসায় বোঝানো যাবে না। কী করা যায়? পরিচিত মুদি দোকানি আলতু মিয়া পথ বাতলে দেয়, ‘রমিজ্যার দোকানে যান। ওই হানে ব্রয়লারের সাতে দেশি মুরগিও পাবেন।’
সে এক দোকান বটে। একে-ওকে জিজ্ঞেস করে, এ গলি-সে গলি ঘুরে সেই আলী বাবার গুহা। আর কী গজব! দোকানে পা দেওয়া মাত্র বিদ্যুৎ ফুঁ।
মোম জ্বেলে ভুতুড়ে এক পরিবেশ তৈরি করল রমিজ। ছায়ার মতো ঘুরছে হাতে গোনা কয়েকটা ব্রয়লার। এর মধ্যে দেশি মুরগি কই?
রমিজের জিজ্ঞাসু দৃষ্টির সামনে বজলু ব্যাকুল কণ্ঠে বলল, ‘দেশি মুরগি আছে?’
রমিজ বেশ ভাব নিয়ে বলল, ‘থাকব না ক্যান? তয় একটাই আছে। সাইজও বড়। দাম বেশি পড়ব।’
অকূলে কূল পেল বজলু। দাম কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু চিকন সন্দেহ দমিয়ে রাখা গেল না। বলেই ফেলল, ‘দেইখেন, বিদেশি না তো আবার?’
আবছা অন্ধকার কোণ থেকে এবার ঝাঁজিয়ে ওঠে বজলুর সহকারী ছোকরা। বলে, ‘কী যে কন আংকেল! এইটা এক্করে খাঁটি দেশি মুরগা। এইটা খালি কক্ কক্ করে না, মামা কইয়া ডাকে।’
রমিজ ধমকে ওঠে, ‘এই বেহুদা, ফালতু কথা কইবি না। মুরগাডা বাইর কইরা দেহা।’
আধো অন্ধকার আরেকটা কোণ থেকে মোরগটাকে বের করে ছোকরা। নিজের কথায় অটল থেকে বলে, ‘ফালতু কথা আমি কই না, মামা। এইডা সত্যি মামা কইয়া ডাকে। তয় সবাইরে কয় না, যারে পছন্দ, তারে মামা ডাকে।’
রমিজ তেড়ে গিয়ে বলে, ‘আরেকটা কথা কইলে চটকনা খাবি। বেয়াদ্দব কোনহানকার!’
চড় খাওয়ার ভয়ে ছোকরা মুখে কুলুপ আঁটে। বজলু হাতে নিয়ে দেখে মোরগটাকে। সত্যিই ওজনদার। তবে দেশি কি না, আবছা আলোতে বোঝা যাচ্ছে না। কী আর করা, কানা মামার কাজ চলবে। কেজিপ্রতি দাম একটু বেশিই চাইল দোকানি। বজলু নিরুপায়। মুঠোফোনের ক্যালকুলেটরে হিসাব করে দাম মেটাল সে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় ড্রেসিং হবে না। মোরগটার দুপা যে বেঁধে দেবে, সে দড়িও নেই। না বেঁধেই ঝুলিয়ে নিতে হবে।

মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০১৫

মানুষ খেকো গুহা যেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসে না!!

ভয়ংকর
অনেক কিছুর কথা শুনলেও এবার
আমরা শুনেছি এক ভয়ংকর
মানুষখেকো গুহার কথা। সেই
ভয়ংকর গুহার কাহিনী আপনাদের
সামনে তুলে ধরবো।
এক অবিশ্বাস্য বা আশ্চর্যজনক হলেও
এটি সত্যি।এমনই একটি গুহা আছে
যেটি মানুষখেকো গুহা নামে
পরিচিত। গুহা কি মানুষ খেতে
পারে আমরা যে গুহার কথা বলছি
সেটাতে শুধু মানুষ নয়, যে কোনো
জীব এই গুহার মধ্যে ঢুকলেই আর
জীবিত বেরিয়ে আসা তার
পক্ষে এক কথায় অসম্ভব ব্যাপার।
তথ্য: অনলাইন পত্রিকা সূত্রের।
এটি গ্রিক ভূগোলবিদ স্ট্রাবোর
মতে প্রাচীন গ্রিক শহর
হিয়ারাপোলিসে ছিল
অ্যাপোলো দেবতার একটি
মন্দির। মন্দিরটি একসময় নানা
কারণে রহস্যময় মন্দির হিসেবে
পরিচিতি পায়। এ মন্দিরের
পাশেই ছিল একটি গুহা। এ গুহার
বৈশিষ্ট্য ছিল, ভেতরে কোনো
জন্তু-জানোয়ার ছুঁড়ে দিলে তা
আর ফিরে আসত না। এমনকি
কোনো মানুষও যদি এই গুহার
প্রবেশমুখ সামান্যও অতিক্রম করত
তাহলে সেও আর ফিরে আসত না।
তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো,
পুরোহিতরা এ গুহার ভেতরে
নিরাপদে ঢুকতে পারতেন আবার
বের হয়েও আসতে পারতেন। তবে
পুরোহিতরা যখন বেরিয়ে
আসতেন তখন তাদের মুখমণ্ডল ফুলে
যেত এবং রক্তাক্ত হয়ে যেত।
প্রাচীন গ্রিকবাসীদের বিশ্বাস
ছিল এই গুহা হল পরলোকে যাওয়ার
পথ এবং সেখানে রাজত্ব করে
অপদেবতারা। সাধারণ মানুষ বা
জীব-জানোয়াররা সেখানে
গেলে অপদেবতারা তাদের
মেরে ফেলে আর দেবতারা
গেলে তাদের ঐশ্বরিক
ক্ষমতাবলে অপদেবতাদের সাথে
লড়াই করে ফিরে আসতে পারেন
সে কারণেই।
২০০০ বছর আগে স্ট্রাবো এ তথ্যটি
তার পুঁথিতে লিখেছিলেন।
বর্তমানে আধুনিক বিশ্বের মানুষ
ভূত, প্রেত বিশ্বাস করে না।
বিজ্ঞানেও এদের কোনো
বাস্তবতা এবং স্থান নেই।
তাহলে কি সেখানে কোনো
অপদেবতা ছিল না? না থাকলে
সেখানে মানুষ, জীব-জন্তুদের
মেরে ফেলত কারা তাহলে কি
ওই গুহাটি নিজেই মানুষখেকো
গুহা!
স্ট্রাবোর পুঁথির সূত্র ধরে
আমেরিকার নিউইয়র্ক কলেজের
অধ্যাপক শেলডেন এই বিষয়ে
নির্ভরযোগ্য নতুন তথ্য প্রকাশ
করেছেন। তার মতে, ওই গুহার নিচ
থেকে প্রাকৃতিকভাবে কার্বন-
ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হত।
ফলে কোনো মানুষ বা জীবজন্তু
গুহার ভেতরে প্রবেশ করলে
কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের
প্রভাবে শ্বাসকষ্টে মারা যেত।
তাহলে এখন প্রশ্ন, পুরোহিতরা
ভেতরে ঢুকলে মারা যেতেন না
কেন?
এ বিষয়ে শেলডেন বলেন,
পুরোহিতরা বিষয়টা পূর্ব থেকেই
জানতেন সেজন্য তারা এই গুহার
ভেতরে ঢুকে দম বন্ধ করে থাকতেন।
বাইরে এসে তাদের শক্তি ও
ক্ষমতার মহিমা প্রচার করতেন।
তারা যখন গুহার বাইরে আসতেন
তখন তাদের মুখমণ্ডল গ্যাসের
চাপে ফোলা ও রক্তাক্ত থাকত
বলে তিনি মনে করেন।
প্রাচীন এ গ্রিক শহরটি বর্তমানে
পশ্চিম তুরস্কের পাজুক্কাল শহরে
অবস্থিত। সেখানে আছে প্রচুর উষ্ণ
প্রসবণ। তার মধ্যে রয়েছে অধিক
পরিমাণ ক্যালসিয়াম কার্বনেট।
এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ার ফলে
এ থেকে উৎপন্ন হয় প্রচুর কার্বন-
ডাই-অক্সাইড গ্যাস। বাষ্প ও
কার্বন-ডাই-অক্সাইড কোনো
ফাটল দিয়ে ঢুকে যায় গুহার
ভেতরে। আর তাই ভেতরে কয়েক
পা গেলেই নিশ্চিত মৃত্যু।
অ্যাপোলোর মন্দিরের সেই
রহস্যময় গুহাটি আজও আছে। কয়েক
বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার একদল
ছাত্র কৌতূহলী হয়ে ওই গুহার
ভেতরে ঢুকেছিল পরীক্ষার জন্য।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, তারা
আর ফিরে আসেনি। এরপর থেকে
তুর্কি সরকার গুহামুখে লোহার
পাত বসিয়ে দিয়েছে । যাতে
আর কেও এই গুহার ভেতরে প্রবেশ
করতে না পারে। এসব কাহিনী
শুনে এখন আর কেও এই গুহার ভেতরে
যেতে চান না। এমনসব
পরিস্থিতির কারণে এই
গুহাটিকে সবাই একটি ভয়ংকর
মানুষখেকো গুহা হিসেবে
চিহ্নিত করেছে। তাই বলে আপনি
আবার এই ভয়ংকর গুহাটি
স্বচোক্ষে দেখার চিন্তা কখনও
মাথায় আনবেন না।

শুক্রবার, ১২ জুন, ২০১৫

"সরকারি সেবাই যত সমস্যা" সমাধান দিয়ে জিতে নিন পুরষ্কার।

সরকারি সেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের যেন অভিযোগের শেষ নেই। এখনও সেবা নিতে গিয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়েন নাগরিকরা। অথচ এই ভোগান্তির কথা কে শুনেছে! অথবা শুনলেও কি তার সমাধান মিলেছে?

সাধারণ নাগরিকরা ধরেই নিয়েছে সরকারি সেবা পেতে হয় উৎকোচ দিতে হবে, নয়তো দিনের পর দিন এই দুয়ার ওই দুয়ার ঘোরাঘুরি। স্বাভাবিকভাবেই এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হবার পেছনে নাগরিকদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতাই যুতসই প্রমাণ।

কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিগত কয়েক বছরে সেবার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির সম্পৃক্ততা ধীরে ধীরে এই অভিজ্ঞতার ধরণ বদলে দিচ্ছে।

তবে সবচেয়ে বড় চমক দিয়েছে সরকারেই এক কার্যক্রম অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)।

সরকারি সেবার চিরাচরিত ভোগান্তির ধারা মুছে দিতে ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষেরই বাতলে দেয়া পথে সমাধানের উপায় খুঁজছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এই প্রোগ্রাম।

সরকারি সেবায় সাধারণ মানুষের সকল ভোগান্তির কথা শুনছে এটুআই। সেইসাথে তাদের কাছ থেকে এসব ভোগান্তি থেকে মুক্তির উপায় ও পরামর্শও নিচ্ছে।

বিশ্ব পাবলিক সার্ভিস ডে-২০১৫ উপলক্ষ্যে সরকারি সেবায় ভোগান্তি থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে কার্যক্রম শুরু করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নের অন্যতম এই প্রকল্পটি। ২৩ জুন সারা বিশ্বে এই দিবস পালিত হবে।

জীবন থেকে নেয়া’ শিরোনামের এই ক্যাম্পেইনে ইতিমধ্যে ৭৪৫ জন সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যা ও এর থেকে মুক্তিতে নিজ ভাবনার কথা জানিয়েছে এটুআইকে।

সমস্যা এবং সমাধানের উপায় জানানোর জন্য ১ লাখ টাকা পুরস্কারের আয়োজন রেখেছে এটুআই। সেরা তিনজন সমাধান দাতা পাবেন যথাক্রমে ৫০হাজার, ৩০হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে।

১৫ জুনের পর্যন্ত এটুআইয়ের এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা যাবে। সমস্যা ও সমাধানের কথা জানাতে আগ্রহীদের যেতে হবে এই ঠিকানায়

২০০৭ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে জনগণের দুয়ারে সেবা পৌঁছে দিতে নতুন নতুন প্রকল্পের মূল্যায়ন ও নিরীক্ষণে কারিগরী সহায়তার পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালায় তথ্যপ্রযুক্তিকে মূল স্রোতে আনতে কাজ করে যাচ্ছে এটুআই

মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০১৫

মানুষের মাংস বিক্রি হয় নাইজেরিয়ায়


মানুষের মাংস বিক্রির
অভিযোগে বন্ধ হয়ে গেল
নাইজেরিয়ার হোটেল
আনাম্বারা। বিবিসি সংবাদ
মাধ্যেমে জানা যায়, আনাম্বারা
হোটেলের আশপাশের
অধিবাসীরা নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে
জানতে পারে, সেখানে
গ্রাহকদের জন্য মানুষের মাংস
রান্না করেছিল। এরপর তারা
পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে
পুলিশ দ্রুত সেখানে রেড দিয়ে
মানুষের মাথার সন্ধান পায়। তখনও
মাথা হতে তাজা রক্ত ঝরছিল বলে
জানায় পুলিশ।
আনাম্বারা
রেস্টুরেন্টে মানুষ মেরে মাংস
নেবার পর রক্ত ও বর্জ্য পলিথিন
ব্যাগে করে লুকিয়ে ফেলা হতো
বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
মানুষের মাংস ছাড়াও পুলিশ
সেখানে অস্ত্র, গ্রেনেড এবং সেল
ফোন খুঁজে পায়। পুলিশ সেখান হতে
এই অপরাধের সাথে জড়িত থাকার
দায়ে এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার
করেছে।
আনাম্বারা রেস্টুরেন্টের পাশের
বসবাসকারী একজন বলেন, সবসময়
আমি বাজারে যাই। ঐ হোটেলের
পাশ দিয়ে বাজারে যাবার সময়
আমি কিছু অদ্ভুদ কার্যক্রম দেখি।
সেখানকার লোকজন পরিস্কার
কাপড় পরিধান করতনা এবং তাদের
বিটের মত লাগত দেখে আমি খুব
অবাক হই।‘
একজন ধর্মযাজক আনাম্বারা
রেস্টুরেন্টে খেয়েছিল এবং যখন
তাকে ৭০০ নাইরা (যা
মোটামুটিভাবে ৩.৫০ ডলারের
সমান) এর বিল দেয়া হয় তখন তিনি
রীতিমত অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
নাইজেরিয়ার লাখ লাখ লোক
বেঁচে থাকার জন্য যেখানে
প্রতিদিন এক ডলারের নিচে খরচ
করে থাকে। সেই যাজক বলেন,
তারা আমার প্রতিক্রিয়া দেখে
বলে, আমি যে মাংস টুকরো
খেয়েছি তাঁর জন্য এই বিল এসেছে।
তিনি বলেন, আমি জানতাম না যে,
তারা আমাকে মানুষের মাংস
খাইয়েছে এবং তাঁর বিল এত বেশী
ছিল।
গত বছর অস্ট্রেলিয়ার মারকাস
ভল্কে নামের এক ব্যক্তি তাঁর গার্ল
ফ্রেন্ডকে মেরে তাঁর মাংস
রান্না করে।
ঠিক একই ঘটনা ঘটে গতবছর
ব্রাজিলেও। সেখানে এক পুরুষ এবং
দুই মহিলা তাদের বাসার কাজের
আয়াকে হত্যা করে মাংস রান্না
করার অপরাধে গ্রেফতার হয়।

মানুষ খেকো গর্ত অবাক হলেও সত্যি

অবাক করা এ পৃথিবীতে সব কিছুই
যারা বিজ্ঞান দিয়ে বুঝতে
চেষ্টা করেন, বিচার করতে চেষ্টা
করেন। তাদের কাছে অনেক কিছুই
গোলকধাঁধায় থেকে যায়, কেননা
পৃথিবীতে এমন অনেক আশ্চর্য ঘটনা
ঘটে কিংবা এমন অনেক অবাক করা
স্থান আছে যে গুলোর কোন
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত
খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবুও কোন
না কোন ভাবে একটা যুক্তি তৈরি
হয়েছে এ সব অজানা বিষয়ে।
তেমনি এক আশ্চর্য গুহা, যা মানুষ
খেকো গুহা নামে পরিচিত।
মানুষ
কিংবা যে কোন জীব আজ পর্যন্ত
যেখান থেকে জীবিত ফিরে
আসতে পারেনি। শুনে অবিশ্বাস্য
মনে হলেও হাজারও অবাক
বিস্ময়ের মত এও এক বিস্ময় হয়ে রয়ে
গেছে আজও মানুষের কাছে।
সম্প্রতি আমেরিকার গণ মাধ্যম এমন
এক গুহার কথা প্রকাশ করেছেন
মিডিয়ায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে
ঘটে এমন ঘটনা। শিকাগো শহরের
দক্ষিন- পূর্বে একটি উপকূলীয়
এলাকায় নাথান নামের ছয় বছর
বয়সী এক বালকের এ অদৃশ্য হবার ঘটনা
ঘটে। ঘুরতে গিয়ে সবার চোখের
সামনেই গর্তে তলিয়ে যায়
নাথান। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে
নাথানের তলিয়ে যাওয়ার
জায়গায় পূর্বে কোন গর্ত ছিলনা।
তবে সেখানে যাবার পর দেখা
যায় প্রায় ১১ মিটার গভীর একটি
গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। পরে অবশ্য
উদ্ধারকারি দল এসে অনেক চেষ্টার
পরে নাথান কে গর্ত থেকে উদ্ধার
করতে সম্ভব হয়।
১১ মিটার সেই গর্তটি কিছুদিন পর
আপনা থেকেই আবার অদৃশ্য হয়ে যায়
বলে জানা গেছে।
সাগর উপকুলে হটাৎ এ ধরনের আশ্চর্য
ঘটনার এখন পর্যন্ত কোন বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা মিলেনি। পুরো মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে চলছে হৈচৈ।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
নৃতত্ত্ববিদদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি
করা এ ঘটনার নানা রকম ব্যাখ্যা
দেবার চেষ্টা হলেও কোনটিই এখনও
নির্ভরযোগ্য বলে ধরা যায়নি।
রহস্যজনক এ গর্তের কিনারা না
করতে পেরে নৃতত্ত্ববিদদের ঘুম
অনেকটা হারাম হয়ে গিয়েছে।
উপকূলীয় মাউন্ট বাল্ডির এ
বালিয়াড়িতে এ ধরনের আরও
অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ
গর্তগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একদিনের
মধ্যে গর্ত গুলো বুজে যায় এবং আরও
নতুন গর্ত সৃষ্টি হয়। এদিকে
পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষ
পুরো এলাকায় মানুষের
যাতায়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা
জারি করেছে।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলছে, এগুলো
আসলে চোরাবালিই। তবে ভেজা
চোরাবালির সাথে এর বৈশিষ্ট্য
অনেকটা আলাদা। তারা বলছে,
মানুষের তৈরি বালিয়াড়িতে
হঠাৎ করে এ ধরনের গর্ত তৈরি হতে
পারে, যা যে কোন জিনিস কে
নিজের ভিতরে টেনে নিতে
পারে।