শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

নাসিরের দূর্দান্ত ব্যাটিং এ বাংলাদেশ "এ" দলের জয়।

নাসির হোসেন

নাসির হোসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভারতীয় 'এ' দলকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৫ রানে হারালো বাংলাদেশ 'এ' দল। সেই সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সমতা আনলো মুমিনুল হকের দল। আজ ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আগে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন নাসির। এরপর ১০ ওভারে ৩৬ রানে ৫ উইকেট শিকার করে স্বাগতিক 'এ' দলকে হার মানতে বাধ্য করেন। টস হেরে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৫২ রান করেছিল সফরকারী বাংলাদেশ দল। জবাবে, ৪২.২ ওভারে ১৮৭ রানে অল আউট হয় ভারত 'এ' দল।

নাসির ব্যাট হাতে প্রথমে সেঞ্চুরি করেছেন। প্রথম ম্যাচেও ফিফটি করেছিলেন তিনি। তিনটি চমৎকার জুটি হয়েছে বাংলাদেশ 'এ' দলের ইনিংসে। প্রথমে ৬০ রানের জুটি গড়েছেন সৌম্য সরকার (২৪) ও এনামুল হক (৩৪)। দ্বিতীয় উইকেটে দলকে ভিত্তি দিয়েছেন তারা। এরপর একপর্যায়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মুমিনুল হকের দল। ২২ রানে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। ৮২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে। ষষ্ঠ উইকেটে ৭০ রানের জুটি গড়ে ওখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নাসির ও লিটন দাস। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও রান পেয়েছেন লিটন। করেছেন ৪৫ রান। তার বিদায়ের পর সপ্তম উইকেটে আরাফাত সানির (১৭) সাথে ৫০ রানের জুটি গড়েন নাসির।

দল যখন ধুকছে তখন নাসির ব্যাট করতে নামেন কঠিন পরিস্থিতিতে। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিয়ে দলের স্কোরিং রেট ধরে রেখেছেন। একাধিক জুটি গড়েছেন। ভারতীয় বোলারদের হতাশ করেছেন। নাসিরের ব্যাটিংটা ছিল আক্রমণাত্মক। বাংলাদেশ যে বিপদে সেটা বুঝতে দেননি তিনি। সাত নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করার দারুণ কৃতিত্ব তার। রুবেলকে নিয়েও অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েছেন নাসির। ৯৬ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কার মারে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন নাসির। রিশি ধাওয়ান তিনটি ও কার্ন শর্মা দুটি উইকেট নেন।

জবাবে, ভারতীয় 'এ' দলের শুরুটা ছিল চমৎকার। তারা আগের ম্যাচে তিন শ'র বেশি রান করেছে। তাই ২৫৩ রানের টার্গেটটা তাদের জন্য অনেক বড় ছিল না। শুরুটাও ভালো হয় তাদের। রুবেল হোসেন এই ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম আঘাত হানেন তিনি। ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে (২৪) দলের ৩১ রানের সময় ফিরিয়ে দেন রুবেল। উন্মুক্ত চাদ ও মনিশ পান্ডে ৮৮ রানের জুটি গড়ে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলাদেশ 'এ' দলের সামনে। কিন্তু এরপর রুবেল ও নাসির মিলে হামলে পড়েন স্বাগতিকদের ওপর।

পেস ও স্পিনের আক্রমণে দিশেহারা হতে থাকে ভারতীয়রা। ২৮ ওভারে ১ উইকেটে ১১৯ রান ছিল স্বাগতিকদের। ২ উইকেটে ১৩৭ রান ছিল তাদের। সঠিক পথেই ছিল তারা। কিন্তু এই ম্যাচের অধিনায়ক চাদকে ৫৬ রানে ফিরিয়ে দেন নাসির। এটা তার প্রথম শিকার। এরপর রুবেল মনিশকে তুলে নেন ৩৬ রানে। ৩৪তম ওভারে নাসির তুলে নেন সুরেশ রাইনা (১৭) ও করুন নাইরকে (৪)। ২০ রানের মধ্যে ভারতের ৬ উইকেট তুলে নেন রুবেল ও নাসির। এরপর আর ফেরার উপায় থাকেনি স্বাগতিকদের। গুরকিরাত সিং ৩৪ রান করলেও ভারতের ৫ নম্বর থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যাটসম্যান উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। দুই প্রান্ত থেকে নাসির ও রুবেল উইকেট ভাগাভাগি করার খেলায় মেতেছিলেন। শেষ পর্যন্ত বেশিদূর আর যেতে পারেনি ভারত 'এ'। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের দলকে মাটিতে নামিয়ে এনে বাংলাদেশ 'এ' দল পায় দারুণ এক জয়।
বাংলাদেশের বোলারদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হয়। পেসার রুবেল ৯ ওভার বল করেছেন। ৩৩ রান দিয়েছেন। নিয়েছেন ৪ উইকেট। নাসির ৫ উইকেট। দুজনে মিলে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আল আমিন রান বেশি দিলেও একটি উইকেট নিয়েছেন। শফিউল ৭ ওভারে ২ মেইডেন দিয়ে ৩২ রান দিয়েছেন। আরাফাত সানি ৮ ওভারে ২৯ রান দিয়েছেন।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ফুটবলে এবার ইতালিয়ান অধ্যায়

ফুটবলে এবার ইতালিয়ান অধ্যায়
কালই বাংলাদেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছেন ফাবিও লোপেজ। প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নতুন ইতালিয়ান কোচ এলেন লাল-সবুজ জার্সি গায়েই l প্রথম আলো
একজন গেলেন, আরেকজন এলেন। বেশ দক্ষতার সঙ্গেই ‘নাটক’ মঞ্চায়ন করল বাফুফে! একসময় বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের চেয়ার দেড়-দুই বছরও শূন্য পড়ে থাকত। এবার এক-দুই মিনিটও খালি থাকল না! লোডভিক ডি ক্রুইফের জুতায় পা গলাতে একটুও দেরি হলো না ফাবিও লোপেজের।
পুরো কাজটাই হয়েছে গোপনে গোপনে, তবে পরশুই লোপেজের বিষয়টি এগোয় চূড়ান্ত পরিণতির দিকে। ৪২ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচকে নিয়ে স্থানীয় একটি হোটেলে আলোচনায় বসেন বাফুফের কয়েকজন নীতিনির্ধারক। সেখানেই চূড়ান্ত হয়ে যায় বাংলাদেশের ফুটবলে ১৬তম বিদেশি কোচ হিসেবে তাঁর নিয়োগ। পরশু রাতেই ডি ক্রুইফকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর সঙ্গে আর নতুন চুক্তি নয়। ডাচ কোচ তাই কাল ভোরেই বাফুফেতে তাঁর আড়াই বছরের ঘটনাবহুল অধ্যায়ের শেষে টেনে ঢাকা ছেড়ে গেছেন।
নতুন কোচের নিয়োগ কালই বাফুফের জরুরি সভায় অনুমোদিত হয়েছে। কথা ছিল বিকেল সোয়া ৪টায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হবে। কোচ রাস্তায় যানজটে আটকে পড়ায় সেই সংবাদ সম্মেলন হলো সন্ধ্যা ৬টায়। দুপুর থেকেই বাফুফে ভবনে অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিক গোষ্ঠী অবশেষে পেল নতুন কোচের দর্শন।

সিরিজ খেলতে দেশে আসছে ইংল্যান্ড।



লর্ডসে সেঞ্চুরির পর তামিম ইকবালের সেই ‘উড়ন্ত’ উদ্‌যাপনটা নিশ্চয় মনে আছে। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজ বলতেই ওই ছবিটা মূর্ত হয়ে ওঠে মুহূর্তেই। ওটাই ছিল দুই দলের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ। সাদা পোশাকে আবারও দুদল মুখোমুখি হবে আগামী বছর। ২০১৬ সালের অক্টোবরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসছে ইংল্যান্ড।
২০০৩ সালের অক্টোবরের পর ইংল্যান্ড সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিল ২০১০ সালের মার্চে। এরপর একই বছর মে মাসে ইংল্যান্ডে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১০ সালে পিঠাপিঠি দুটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার পর বাংলাদেশের সঙ্গে আর টেস্ট খেলেনি ইংলিশরা। এর মাঝে ওয়ানডে খেলেছে কেবল দুটি, ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে। দুটিতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেছে ইংলিশরা।
অর্ধযুগ পর অনুষ্ঠেয় দুই দলের এ দ্বিপক্ষীয় সিরিজে থাকছে দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে। এ সিরিজ সম্প্রচারের দায়িত্ব পেয়েছে ‘স্কাই স্পোর্টস’। আগামী বছর ইংলিশরা এলেও ইংল্যান্ডের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশকে খেলতে অপেক্ষা করতে হবে আরও চার বছর। সূচি অনুযায়ী, ২০২০ সালের আগে ইংল্যান্ডে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার সম্ভাবনা সামান্যই।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যান অবশ্য ইংলিশদের দিকেই হেলে। ৮ টেস্টে প্রতিটি হেরেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে পরিসংখ্যান তবুও কিছুটা স্বস্তিদায়ক, ১৬টির তিনটিতে জিতেছে লাল-সবুজের দল। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ যেভাবে পারফর্ম করছে, তাতে অতীত পরিসংখ্যান ভুলে যেতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দল। আগামী বছরও একই ছন্দ ধরে রাখতে পারলে ইংলিশদের বিপক্ষে পুরোনো রেকর্ডও বাধা হওয়ার কথা নয় মুশফিকদের।

শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

শ্রীলঙ্কা–অধ্যায় সুখের ছিল না হাথুরুর

শ্রীলঙ্কা–অধ্যায় সুখের ছিল না হাথুরুর


শ্রীলঙ্কা দলের কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহের নাম আসাটা গুজবই মনে করছে বিসিবি। ছবি: প্রথম আলো

গুজবের ডালাপালা ভালোই ছড়িয়েছে। শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যৎ কোচ হিসেবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহ ও সারে কাউন্টি ক্লাবের কোচ গ্রাহাম ফোর্ডের নাম আসছে বিভিন্ন সংবাদমধ্যমে। তবে এ আলোচনায় অগ্রাধিকার পাচ্ছেন হাথুরু। কেবল লঙ্কান বলেই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর অধীনে বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার কারণেই। এখন কথা হলো, তিনি আদৌ দেশের দায়িত্ব নেবেন কিনা। 
বিসিবি মনে করছে, এটি স্রেফ গুজব। হাথুরুর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাই বাংলাদেশের। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম নিজামউদ্দিন চৌধুরী বললেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের আসলে কিছুই জানা নেই। গত রাতেও কথা হলো তাঁর সঙ্গে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হলো। এ ব্যাপারে তো কিছু শুনলাম না।’ 
শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব যদি হাথুরু নিতেও চান, তাহলে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতার ব্যাপারটি কিন্তু সামনে চলে আসবেই। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) সঙ্গে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতাও ভালো নয়।

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

বর্ষসেরা হলো মেসির সেই জাদুকরী গোল

বর্ষসেরা হলো মেসির সেই জাদুকরী গোল
মেসির সেই গোল। ফাইল ছবি
The Ataturk Times


 পুরস্কারটা ২০১১ সালে জিতেছিলেন সর্বশেষ। ব্যালন ডি’অর আর ফিফা বর্ষসেরা একীভূত হওয়ায় সেই বছরই প্রথম চালু করা হয় উয়েফা বর্ষসেরার নতুন পুরস্কার। কিন্তু গত তিন মৌসুমে এই পুরস্কার আর জেতেননি। আজ মুকুট কি আবার উঠবে লিওনেল মেসির মস্তকে?
সেই উত্তর জানতে আরও অপেক্ষা করতে হচ্ছে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র আর বর্ষসেরার ঘোষণার মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে দশটায়। তবে এরই মধ্যে মৌসুমের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি পেলেন মেসি।

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

মুস্তাফিজের পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া।স্বপ্ন অ্যান্ডারসন হওয়া।

ন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় প্রায়ই। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের নেটে কিংবা একাডেমি ভবনে। চুটিয়ে আড্ডা চলে, খুনসুটি হয় দুজনের মধ্যে। কিন্তু আগের মতো আর প্রতি পদক্ষেপ মেলে না তাঁদের। মিলবে কিভাবে? মুস্তাফিজুর রহমান যে এখন জাতীয় দলের মহাতারকা! আর সাইফ উদ্দিন আছেন সেই আগের জায়গাতেই; অনূর্ধ্ব-১৯ দলে।
The Ataturk Times

বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ পৌঁছে গেছেন তাঁর গন্তব্যে। অলরাউন্ডার সাইফ সেই পথ খুঁজছেন প্রাণান্ত চেষ্টায়। তাঁর মনের আকাশে তাই মেঘ জমে কখনো-সখনো। কিন্তু পরক্ষণেই আবার প্রতিজ্ঞার সূর্যটা যেন ঝিলিক দিয়ে ওঠে। বন্ধু মুস্তাফিজকে তাই সাইফ বলতে পারেন, 'দেখিস, একদিন নিশ্চয়ই আবার তোর টিমমেট হব। যেমনটা ছিলাম আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ দলে।'

ভবিষ্যতের কোনো বাঁকে জাতীয় দলে জায়গা করে নেবেন এই অলরাউন্ডার, এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্দরমহলে সংশয় সামান্য। বয়সভিত্তিক দলগুলোর প্রতিটি পর্যায়ে যে আলো ছড়িয়ে এগোচ্ছেন সাইফ! মিডল অর্ডারে বাঁহাতি বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে। আর ভীষণ কার্যকরী ডানহাতি পেস বোলিংয়ে। এমন একজন অলরাউন্ডারের জন্য অনেক দিন ধরেই তো হাপিত্যেশ করছে বাংলাদেশ! আবার মুস্তাফিজের সতীর্থ হওয়ার স্বপ্ন সাইফের জন্য তাই আকাশকুসুম কল্পনা নয় মোটেও।

শৈশবে ক্রিকেটার হওয়াটাই অবশ্য আকাশকুসুম কল্পনাই ছিল। পুলিশ অফিসার বাবা যে একদমই পছন্দ করতেন না খেলাটি! তাঁর চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ফেনীর এই ছেলে লুকিয়ে লুকিয়ে বন্ধুতা গড়ে তোলেন ক্রিকেটের সঙ্গে। টিভিতে মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিং দেখে ইচ্ছে জাগে জাতীয় দলে খেলার। কিন্তু সাধ থাকলেও সাধ্য রয়েছে কি না, এ নিয়ে সংশয় ছিল নিজের ভেতর। সেটি দূর হওয়ার গল্প বলতে গিয়ে এত দিন পরও কণ্ঠ কেঁপে ওঠে সাইফের, 'আমার বড় ভাই কফিল নিজে ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন। সেটি পারেননি বলে আমাকে বানাতে চান ক্রিকেটার। বাবার বকাবকি থেকে উনিই আমাকে বাঁচিয়ে রাখতেন সব সময়। আর এলাকার অপু ভাই আমার খেলা দেখে অনূর্ধ্ব-১৪ জেলা দলে ট্রায়াল দিতে নিয়ে যায়। সেখানে টেকার পরই মনে হয়েছে, ক্রিকেটে আমার হবে।' বেঁচে থাকলে সাইফের বাবাও নিশ্চয়ই এখন এর সঙ্গে সায় দিতেন।

অনূর্ধ্ব-১৪ পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি রান করেন সাইফ। অনূর্ধ্ব-১৬তে পুরো দেশের মধ্যে। সঙ্গে সেরা অলরাউন্ডারের পুরস্কার। অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলে ডাক পান তিনি। পারফর্ম খারাপ করছিলেন না, কিন্তু ইনজুরির কারণে ছিলেন না নিজের সহজাত শ্রেষ্ঠত্বে। অবশেষে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দুটি সিরিজেই যেন নিজেকে চেনানোর পথে দীর্ঘ পদক্ষেপ এঁকে দেন সাইফ। ঘরের মাঠের সিরিজে সাত ম্যাচে ১১ উইকেটের পাশাপাশি ১২২ রান। ফিরতি সফরে ব্যাটিংটা তেমন ভালো না হলেও সাত শিকার করেন ঠিকই।

তবে শুধু পরিসংখ্যান সাইফের পারফরমেন্সের প্রতিফলক নয়। যেকোনো মুহূর্তে ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা যে রয়েছে তাঁর! সেটি স্লগ ওভারের বোলিংয়ে হোক কিংবা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে। গত এপ্রিলে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পঞ্চম ম্যাচে যেমন ৫ উইকেট নিয়ে অসম্ভব এক ম্যাচ জেতান দলকে। আবার এক খেলা পরই লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে ব্যাটিং করে অপরাজিত ৩৪ রানে ছিনিয়ে আনেন ১ উইকেটের জয়। 'কফিল ভাই চেয়েছিল অন্তত একটি খেলাতে যেন ম্যাচসেরা হই। দুটিতে হয়েছি। খুব খুশি হন তিনি'- বলতে গিয়ে আবারও যেন আবেগ ভর করে সাইফের কণ্ঠে।

এবার তাঁর লক্ষ্য সেরা অলরাউন্ডার হয়ে বাংলাদেশকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতানো। এরপর জাতীয় দলে মুস্তাফিজের সতীর্থ হওয়ার প্রতিজ্ঞাপূরণের পালা। আর একবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ওঠার পরের লক্ষ্য? আত্মবিশ্বাসের ঝিলিকে বলেন সাইফ, 'আমি চাই বাংলাদেশের কোরে অ্যান্ডারসন হতে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দেশকে জেতাতে চাই অনেক অনেক ম্যাচ।'

মুস্তাফিজ এরই মধ্যে জেতানো শুরু করেছেন বাংলাদেশকে। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে লড়াই করার জন্য বন্ধু সাইফও আসছেন অদূর ভবিষ্যতে।
সূত্র: কালের কন্ঠ।

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

সাঙ্গাকারার ১০ টি তথ্য।

কলম্বোর পি সারা ওভাল আজ আরেকটি ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছে। ক্রিকেটের মহাতারকা কুমার সাঙ্গাকারা আজ এই মাঠেই খেলতে নেমেছেন তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। আধুনিক পাওয়ার ক্রিকেটের মাঝেও গুটি কয়েক ব্যাটিং শিল্পী তাঁদের তুলির আঁচড়ে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ক্রিকেটের ধ্রুপদী দিক। সাঙ্গাকারা সেই বিরল প্রজাতির একজন। প্রিয় পাঠক, আসুন এই ক্রিকেট-শিল্পীর ক্যারিয়ারের দশটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক তাঁর এই বিদায়ের লগ্নে...
১. সাঙ্গাকারার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ২০০০ সালের ৫ই জুলাই। গলে পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জার্সি গায়ে তিনি প্রথম মাঠে নামেন।
২. তাঁর টেস্ট অভিষেকও ২০০০ সালের জুলাই মাসেই। টেস্ট অভিষেকের মঞ্চও গল। এখানেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাদা পোশাকে অভিষেক হয় তাঁর। 
৩. তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটি এসেছিল ভারতের বিপক্ষে ২০০১ সালের আগস্টে। ভেন্যু সেই গল!
৪. ওয়ানডেতে সাঙ্গাকারার অর্ধ-শতকের সংখ্যা ৯৩। কেবল শচীন টেন্ডুলকারেরই আছে তাঁর চেয়ে বেশি অর্ধশতক হাঁকানোর রেকর্ড(৯৬)
৫. তিনি টেস্ট শতক হাঁকিয়েছেন ৩৮টি। সর্বকালের টেস্ট রেকর্ডে তাঁর ওপরে আছেন কেবল তিনজন। রিকি পন্টিং (৪১), জ্যাক ক্যালিস (৪৫) ও শচীন টেন্ডুলকার (৫১)।
৬. টেস্টে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের অংশীদার সাঙ্গাকারা। প্রিয় বন্ধু মাহেলা জয়াবর্ধনেকে নিয়ে ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২৪ রানের ওই জুটি গড়েন তাঁরা।
৭. সাঙ্গাকারার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে আসে তাঁর ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৩১৯ রান।
৮. বড় ইনিংস খেলার জন্য সাঙ্গাকারার তুলনাই নেই। ক্যারিয়ারে ১১ বার দ্বিশতক হাঁকিয়েছেন। টেস্টে তাঁর চেয়ে বেশি ডাবল সেঞ্চুরি আছে কেবল ডন ব্র্যাডম্যানেরই (১২)। 
৯. টেস্টের সর্বকালের রান সংগ্রাহকের তালিকায় সাঙ্গাকারার অবস্থান পঞ্চম (১২৩৫০ রান)। রাহুল দ্রাবিড়(১৩২৮৮), জ্যাক ক্যালিস (১৩২৮৯),রিকি পন্টিং (১৩৩৭৮) ও শচীন টেন্ডুলকার (১৫৯২১) তালিকার প্রথম চারটি স্থান দখল করে আছেন। 
১০. বিশ্বের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা চার ওয়ানডেতে শতক হাঁকানোর রেকর্ড আছে তাঁর। সেটিও করেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে এই রেকর্ড নিজের করেছেন তিনি। 

মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০১৫

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় যাত্রার নায়ক মাহমুদউল্লাহ আবার ফিরেছেন দলে।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় যাত্রার নায়ক মাহমুদউল্লাহ আবার ফিরেছেন দলে।
যেন বার্তা দিতে চাইছেন, ‘ঠিক আছে বন্ধু!’ কদিন আগে মিরপুর স্টেডিয়াম এভাবেই ক্যামেরাবন্দী মাহমুদউল্লাহ। ছবি: শামসুল হকযেন বার্তা দিতে চাইছেন, ‘ঠিক আছে বন্ধু!’ কদিন আগে মিরপুর স্টেডিয়াম এভাবেই ক্যামেরাবন্দী মাহমুদউল্লাহ। ছবি: শামসুল হক

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে স্বপ্নের মতো এক বিশ্বকাপ গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। এরপর পাকিস্তান সিরিজটা অবশ্য বলার মতো হয়নি। তবে ভারত সিরিজের আগে বিসিএলের শেষ পর্বে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ঠিক ওই সময় হানা দিল চোট। দর্শক হয়েই দেখতে হলো ভারতের বিপক্ষে দলের স্মরণীয় সিরিজ জয়। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় যাত্রার নায়ক মাহমুদউল্লাহ আবার ফিরেছেন দলে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডের দলে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ফিরছেন এনামুল হকও। এনামুল চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপ থেকে। প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বললেন, ‘আমরা চিকিৎসক আর ফিজিওর কাছ থেকে যে রিপোর্ট পেয়েছি, তার ভিত্তিতেই মাহমুদউল্লাহকে নেওয়া হয়েছে। ফিটনেসে কোনো সমস্যা নেই। পুরোপুরি ফিট। আর বিজয়ও (এনামুল) চোটের কারণে দলের বাইরে ছিল। সর্বশেষ সিরিজেও তাকে বাইরে রেখেছিলাম। তবে এখন মনে করছি, সে ফর্মে আছে। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেই তাকে দলে নিয়েছি।’
এনামুল সাধারণত খেলেন ওপেনার হিসেবে। কিন্তু তামিম ইকবালের সঙ্গে এখন নিয়মিত ওপেন করছেন সৌম্য সরকার। তাহলে এনামুলের জায়গা হবে কোথায়? ফারুক জানালেন, ‘ওকে (এনামুল) আমরা টপ অর্ডারের বিকল্প হিসেবে নিয়েছি। সে টপ অর্ডারেই খেলবে।’