রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সুপারমুন!! দেখা যাবে পৃথিবীর আকাশে

ad300
Advertisement
আমাদের চিরচেনা চাঁদ বাংলাদেশ সময়
আগামীকাল সোমবার ভোর ৬.১০-এ আকারে
বেশ খানিকটা বড় ও উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে। এর
শেষ হবে ৯.২৩-এ। চাঁদের এই বিশেষ রূপকেই বলা
হচ্ছে ‘সুপারমুন’। এ দৃশ্য দেখতে পাওয়ার আশায়
উচ্ছ্বসিত আকাশপ্রেমীরা। তবে আমাদের
হতাশই হতে হবে। বাংলাদেশের আকাশ থেকে এই
বিরল দৃশ্য দেখা যাবে না।
কী ভাবে এমন ঘটে? পৃথিবীর একেবারে কাছে
চাঁদের চলে আসা এবং পূর্ণিমা— এই দুই ঘটনার
সংযোগেই দেখা মেলে বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যটির।
সবিস্তার বললে, প্রতি মাসেই একটা করে পূর্ণিমা
হয়। এ সময় চাঁদ ও সূর্যের মাঝে চলে আসে পৃথিবী।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই আকাশে ওঠে গোল
থালার মতো চাঁদ। এ দিকে, পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ
করতে চাঁদের সময় লাগে গড়ে ২৭ দিন ৮ ঘণ্টা।
প্রদক্ষিণ করতে করতে চাঁদ এক সময় পৃথিবীর কাছে
চলে আসে। আবার এক সময় দূরে সরে যায়। কারণ
চাঁদের কক্ষপথ একেবারে গোলাকার নয়। যখন
কাছে চলে আসে, তাকে বলে ‘পেরিজি’। আর দূরে
চলে গেলে বলে ‘অ্যাপোজি’। এই পেরিজি-র সময়
চাঁদ ও পৃথিবীর দূরত্ব যখন সব চেয়ে কমে যায়, তখন
যদি ঘটনাচক্রে
পূর্ণিমা হয়, চাঁদকে স্বাভাবিকের থেকে বড় ও
উজ্জ্বল দেখায়। এই ঘটনাকেই বলে ‘সুপারমুন’।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল
অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব
সেনের কথায়, ‘‘পূর্ণিমা ও চাঁদের কাছে চলে
আসা, এই দুই ঘটনা একসঙ্গে ঘটতে চলেছে ২৮
সেপ্টেম্বর। যেহেতু ধীরে ধীরে চাঁদ কাছে আসছে
পৃথিবীর, তাই এখন থেকেই আকাশে বেশ বড়
দেখাচ্ছে তাকে।’’
যদিও অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ খালি চোখে
তা ধরতে পারেন না। সঞ্জীব বলেন, ‘‘এখন যেমন
পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব প্রায় ৩ লাখ ৫৬
হাজার ৮৭৬ কিলোমিটার। কিন্তু গড়ে এই দূরত্ব
থাকে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এই
২৮ হাজার কিলোমিটার (প্রায়) কাছে চলে
আসাটা সাধারণ মানুষের চোখে সহজে ধরা পড়ে
না।’’ কিন্তু ওই দিন এর সঙ্গেই ঘটতে চলেছে
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণও। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ
শুধুমাত্র উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ,
আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়া (আফগানিস্তান-
পাকিস্তান থেকে আংশিক) দেখতে পাওয়া যাবে।
আর তাই সুপারমুন নয়, উপরি পাওনা হিসেবে
পশ্চিমের দেশগুলি দেখতে পাবে ‘সুপার ব্লাড মুন’।
বড় উজ্জ্বল গোল চাঁদ রক্তাভ বর্ণ ধারণ করবে।
কেন এমন হবে?
এক কথায়, পূর্ণগ্রাস গ্রহণের জন্যই এমনটা
ঘটবে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গ্রহণের সময়
পৃথিবীর ছায়াকোণে ঢুকে পড়ে চাঁদ। এ দিকে,
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা ধুলোকণার উপর এসে
পড়ে সূর্যের সাদা আলোর সাতটি রং। এর মধ্যে
লাল আলো সব চেয়ে কম বিচ্ছুরিত হয়। অন্যান্য রং
বিক্ষিপ্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। লাল আলো যেহেতু কম
ছড়ায়, তাই সেই আলোটিই উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেয়
(ঠিক যে কারণে রাস্তাঘাটে বিপদ সঙ্কেত লাল
রঙে দেখানো হয়)।
ওই লাল আভা প্রতিসরিত হয়ে একটু বেঁকে গিয়ে
পড়ে চাঁদের মাটিতে। ফলে পৃথিবীর উপগ্রহটিকে পুরো
অন্ধকার না দেখিয়ে রক্তাভ বর্ণের দেখায়।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার
বিজ্ঞানী সারা নোবেলের কথায়, ‘‘যে কারণে
সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময় আকাশে লাল আভা
দেখতে পাওয়া যায়, এ ক্ষেত্রেও তা-ই ঘটবে।’’
এমন ঘটনা, অর্থাৎ সুপারমুন ও পূর্ণগ্রাস
চন্দ্রগ্রহণ একসঙ্গে ঘটেছিল সেই ৩৩ বছর আগে
১৯৮২ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এর পরে দেখা যাবে
২০৩৩ সালের ৮ অক্টোবর।

Share This
Previous Post
Next Post

Pellentesque vitae lectus in mauris sollicitudin ornare sit amet eget ligula. Donec pharetra, arcu eu consectetur semper, est nulla sodales risus, vel efficitur orci justo quis tellus. Phasellus sit amet est pharetra

0 Comment:

আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখককে ভালো কিছু লিখার অনুপ্ররেনা যোগাই তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত জানাতে ভুলবেন না । তবে বন্ধুরা এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করবেন না যার ফলে লেখকের মনে আঘাত হানে ! কারণ একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপ্ররেনা জাগাই !!