Advertisement |
বাঘুয়া। নিউ বাংলা সার্কাসে খেলা দেখায় বাঘটা। তার একদিন ইচ্ছে হলো স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখবে। তখন আবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান ক্রিকেট সিরিজ চলছিল। সেদিন ছিল টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তাই বাঘুয়া সিদ্ধান্ত নিল, সে টি-টোয়েন্টি ম্যাচই দেখতে যাবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আশপাশের মানুষ তাকে ভয় পায়। তবু বাঘুয়া সাহস করে স্টেডিয়ামের দিকে রওনা হলো।
স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পর দেখল বাইরে একদম ফাঁকা। ভয়ে ভয়ে সে গেটের কাছে গেল। সেখানে দুজন গার্ড দাঁড়ানো। গেট দিয়ে ঢোকার পর একজন গার্ডকে টিকিট দিল।বাঘুয়া অবাক হয়ে লক্ষ করল, গার্ড দুজন তাকে দেখে ভয়ে পালিয়ে যায়নি। বরং কেমন যেন সমীহর সঙ্গে জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, এত দেরি করে আসলেন কেন? টাইগাররা তো দারুণ খেলছে! জলদি গ্যালারিতে যান।’ বাঘুয়া কোনো উচ্চবাচ্য না করে গ্যালারির দিকে রওনা হলো। সে এত দিন দেখে এসেছে যে মানুষ তাকে দেখলেই ভয়ে চিৎকার করে পালিয়ে যায়। কিন্তু আজ তো পুরো উল্টো কাহিনি। এমনকি গ্যালারির এক পিচ্চি মেয়ে পর্যন্ত বাঘুয়ার কান দুটো হালকা টেনে বলল, ‘ইস, কী সুইট! পুরা তাসকিনের মতো!’ বাঘুয়া ভাবল, ‘সূর্য কি আজ দক্ষিণে উঠেছে নাকি!’ গ্যালারিতে সিটে বসে খেলায় মনোযোগ দেওয়ার পর দেখল ক্রিকেট খেলোয়াড়েরা আসলেও পাকিস্তান দলকে তুলোধুনা করে দিচ্ছে! কী সাংঘাতিক অবস্থা! খেলা যখন শেষ হলো, তখন বাঘুয়া হঠাৎ গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড গ্যালারি থেকে লাফঝাঁপ দিয়ে মাঠে নেমে গেল। আশ্চর্যের ব্যাপার, কোনো নিরাপত্তাকর্মী তাকে ধাওয়া করল না.
ক্রিকেট দলের এক বোলার মাঠে নাচানাচি করছিল। আর অন্যরা মাঠে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ট্রফি রেখে নৃত্যরত বোলারকে উৎসাহ দিচ্ছিল। বাঘুয়া যেই তাদের সামনে গেল, অমনি সবাই থেমে গেল। কিছুক্ষণ সবাই চুপ করে একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। বাঘুয়া ভাবল, ‘এই সেরেছে! এবার না আমাকে ধরেও এরা তুলোধুনা করে!’ কিন্তু বাঘুয়াকে অবাক করে দিয়ে সবাই তার দিকে হইচই করে ছুটে আসতে লাগল। ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তো বাঘুয়ার পিঠেই চড়ে বসল, জিজ্ঞেস করল, ‘বাঘ মামা, তোমার সঙ্গে একটা সেলফি তুলি?’ বাঘুয়া হাসিমুখে মাথা কাত করে সম্মতি জানাল। অধিনায়ক সেলফি তোলার পর পুরো মাঠ চক্কর দিল। আর দর্শকেরা ‘টাইগার্স-বাংলাওয়াশ, টাইগার্স-বাংলাওয়াশ’ বলে চিৎকার করতে লাগল। গর্বে বাঘুয়ার বুকটা ফুলে উঠল! আহ্, কত দিন ধরেই না সে এমন একটা দিনের জন্য অপেক্ষা করেছিল। একই সঙ্গে ক্রিকেট দলের জয় আর অন্যদিকে মানুষেরা তাকে ভয় পেতে ভুলে যেতে দেখে বাঘুয়ার ইচ্ছে হলো ‘গ্যাংনাম স্টাইল’-এ নাচতে। কিন্তু নাচল না। পিঠে অধিনায়ক আছে না!
0 Comment:
আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখককে ভালো কিছু লিখার অনুপ্ররেনা যোগাই তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত জানাতে ভুলবেন না । তবে বন্ধুরা এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করবেন না যার ফলে লেখকের মনে আঘাত হানে ! কারণ একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপ্ররেনা জাগাই !!