Advertisement |
বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামার আগেই জেনে যায় দুর্ভাগ্যটা। কাঁধের হাড় সরে গেছে। সুতরাং, এনামুল হকের ব্যাট করার প্রশ্নই আসে না। তার মানে গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যাটসম্যানকে হারালো বাংলাদেশ। ৩১৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামার আগেই ১ উইকেট নেই টাইগারদের!
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এমন পরিস্থিতিতে তেমন কিছু আসে যায় না। এটা ম্যাচ জেতার পর বলা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাট করতে নামার আগে, এমনকি শেষ পর্যায়ে বলতেও দুঃসাহসের দরকার ছিল। কারণ, সামনে টার্গেটটা তো ছোটোখাটো একটা পাহাড়। ব্যাট করতে নামার আগেই তাই বড় এক উইকেট হারানো বড় এক বিপদের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
সেই বিপদটা বাংলাদেশের ইনিংসে কখনোই ছায়া ফেলতে পারেনি। এতবড় একটা টার্গেট তাড়া করে কিভাবে জয় তুলে নেওয়া যায় সেটা ভাবতে বাংলাদেশকে চোখ রাখতে হয়েছে অতীতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩১২ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে। আর নেলসনের আগের দুই ম্যাচ বলছে, পরে ব্যাট করা দলই জিতবে। মাশরাফি বিন মর্তুজা তো টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন। তার সিদ্ধান্তের পেছনে পরে ব্যাট করে জেতার ধারাটাই নিশ্চয়ই কাজ করেছে।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এমন পরিস্থিতিতে তেমন কিছু আসে যায় না। এটা ম্যাচ জেতার পর বলা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাট করতে নামার আগে, এমনকি শেষ পর্যায়ে বলতেও দুঃসাহসের দরকার ছিল। কারণ, সামনে টার্গেটটা তো ছোটোখাটো একটা পাহাড়। ব্যাট করতে নামার আগেই তাই বড় এক উইকেট হারানো বড় এক বিপদের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
সেই বিপদটা বাংলাদেশের ইনিংসে কখনোই ছায়া ফেলতে পারেনি। এতবড় একটা টার্গেট তাড়া করে কিভাবে জয় তুলে নেওয়া যায় সেটা ভাবতে বাংলাদেশকে চোখ রাখতে হয়েছে অতীতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩১২ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে। আর নেলসনের আগের দুই ম্যাচ বলছে, পরে ব্যাট করা দলই জিতবে। মাশরাফি বিন মর্তুজা তো টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন। তার সিদ্ধান্তের পেছনে পরে ব্যাট করে জেতার ধারাটাই নিশ্চয়ই কাজ করেছে।
মুশফিকুর রহিম যখন তার অনন্য সাধারণ ইনিংসটি খেলে ফিরে যান তখনো ৭২ রান দরকার বাংলাদেশের। বলের সাথে প্রতিযোগিতায় নামার ব্যাপারটি সামনে তখন। কিন্তু বল আর রানের ব্যবধানটা নিয়তই ঠিক রেখে ব্যাট করতে থাকেন সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমান। সাব্বিরের আছে একটা পরিণত মাথা। আর সাকিবের তো প্রশ্নাতীত ঠাণ্ডা মাথা প্রয়োজনের সময়। তারাই ওভার প্রতি ৭/৮ রান করে নেওয়ার একটা টার্গেট বেঁধে ব্যাট করে গেছেন। বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার।
তবে এর সবকিছুই গড়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লা ও মুশফিকরা। বড় টার্গেট তাড়া করতে হলে শুরু থেকেই তাড়ায় থাকতে হয়। ক্ষিদেটা লাগে বেশি। তাই রানের সাথে প্রতিযোগিতা করে্ই ব্যাট করতে হয়। সৌম্য ২ রান করে ফিরে গেলে ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ালো দেখুন। এনামুল নেই। সৌম্য ওপেনার। তার মানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ রান মাত্র!
এখান থেকে পরিস্থিতির কারণে নিজেকে মাহমুদুল্লার মানিয়ে নিতে হয়েছে নতুন বলের সাথে। নামতে হয়েছে ওপেনারের ভূমিকায়। সেই ভূমিকাটা তিনি দারুণভাবে পালন করেছেন। বিশ্বকাপের আগে থেকে রানে ছিলেন। আছেন। তাই আত্মবিশ্বাসটাও বেশি। আর এমন ম্যাচে তো আত্মবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত জেতায়। দুর্ভাগ্যের একটি আউট না হলে মাহমুদুল্লার সামনে ছিল আরো কিছু করার সুযোগ। ৬২ বলে ৬২ করেছেন তিনি।
তামিম ফর্মে ছিলেন না। এই ম্যাচেও তাকে নিয়ে শঙ্কা। কিন্তু তামিম সেই শঙ্কাটা উড়িয়ে দিয়েছেন কিছুক্ষণের মধ্যে। নিজের চরিত্রটা তামিম অনেক বদলে ফেলেছেন। এখন ফিল্ডারদের বেঁধে ফেলা ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতার কারণে হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানদের সুবিধা হয়েছে অনেক। কিন্তু মারমার কাটকাট ব্যাপারটি ছেড়েই দিয়েছেন বুঝি তামিম! তাতে লাভই হয়েছে। তার আউট হওয়ার ঝুঁকিটা কমেছে। এভাবেই ফিফটি করেছেন। সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েছেন। আর সেঞ্চুরির ঘরে গিয়ে আরো বেশি সাবধানী হয়ে গেছেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা ইনিংস, সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেছেন। কিন্তু রান করলে বড় রান করেন, সেঞ্চুরি করলে আরো বড় কিছু করেন। তামিম সম্পর্কে এই তো জানা সবার। কিন্তু লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদ সেঞ্চুরি মিস করার আক্ষেপে পুড়িয়েছে তাকে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা স্কোর এখন তার ৯৫। ১০০ বলের ওই ইনিংসে ৯টি চার ও একটি ছক্কা। মাহমুদুল্লার সাথে তার ১৩৯ রানের জুটিটা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি। প্রয়োজনের দিনে জ্বলে উঠে জয়ের ভিতটা তো তামিমই গড়ে দিয়ে গেলেন।
ব্যাটসম্যানদের জ্বলে ওঠার দিনে মুশফিক ক্রিজে এসেই মারতে শুরু করলেন। বাংলাদেশের এই সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। সময় নেন না তিনি আগ্রাসী হতে। চলতে থাকে তার ব্যাট। কখনো কখনো ব্যাটকে তরবারির মতো লাগে। ফিফটি আসে। তামিমের সাথে একটা জুটি হয় শুরুতে। দুজন মিলে করেন ৫৭ রান। এরপর পার্টনারশিপ হয় সাকিবের সাথে। সম্ভাবনা জাগে সাকিবকে নিয়ে তার একটাই উইনিং জুটি গড়ার। সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল জুটিটা। কিন্তু ৪৬ রানের জুটির পর ফেরেন মুশফিক।
পরের গল্পটা সাকিব ও সাব্বিরের। সাকিব হয়তো ঠিক করে রেখেছিলেন, রান দরকার। কিন্তু বারবার বড় শট খেলে নয়। যত মার তত ঝুঁকি। নিচে আছেন নাসির হোসেন। বিশ্বকাপে তার প্রথম ম্যাচ। তাই সাব্বিরকে নিয়ে যদি জয়ের প্রান্তে পৌঁছানো যায় সেটাই হয় বুদ্ধিমানের কাজ। সেই কাজটি করেছেন। তরুণ সাব্বিরকে অভিজ্ঞ সাকিব গাইড করেছেন। সাব্বিরের ছক্কা, সাব্বিরের চার, সাকিবের সিঙ্গলস, ডাবলস, ম্যাচ জয়ের প্রতিজ্ঞা কোনো বিপদ ডেকে না এনেই স্বচ্ছন্দে এগিয়ে দিয়েছে দলকে। তাদের অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রানের জুটির কোনো পর্যায়ে মনে হয়নি এই ম্যাচ বাংলাদেশ হারতে পারে। শাসরুদ্ধকর কোনো পরিস্থিতি তারা তৈরি হতে দেননি। আক্ষরিক অর্থেই পরিস্থিতির দাবি মেনে চাহিদা মিটিয়ে ব্যাট করে গেছেন। আর ম্যাচ শেষে সাকিব ৪১ বলে ৫২ এবং সাব্বির ৪০ বলে ৪২ রানে অপরাজিত দুই টাইগার।
0 Comment:
আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখককে ভালো কিছু লিখার অনুপ্ররেনা যোগাই তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত জানাতে ভুলবেন না । তবে বন্ধুরা এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করবেন না যার ফলে লেখকের মনে আঘাত হানে ! কারণ একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপ্ররেনা জাগাই !!