![]() |
Advertisement |
‘টাউনহল কিউঅ্যান্ডএ’ নামের এই প্রশ্নোত্তর পর্বগুলো ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বরে শুরুর পর থেকে একরকম নিয়মিতই আয়োজন করা হচ্ছে—কখনো ফেসবুক সদর দপ্তরে সরাসরি, আবার কখনো অনলাইনে৷ উদ্দেশ্য নিয়ে মার্ক নিজেই লিখেছেন, আমাদের কমিউনিটি কী নিয়ে ভাবছে, তা জানার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এই টাউনহল প্রশ্নোত্তর পর্ব।
ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এবং হলিউড অভিনেতা ও ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারের মতো তারকা মানুষও এবার প্রশ্ন করেছিলেন জাকারবার্গকে। তাঁরা যখন প্রশ্ন করেছেন, তখন এবারের প্রশ্নোত্তর পর্বের আলাদা গুরুত্ব তো আছেই৷ প্রশ্নোত্তর পর্বের সেই নির্বাচিত কিছু প্রশ্ন ও মার্ক জাকারবার্গের উত্তর অনুবাদ করে কিছুটা সংক্ষেপে এখানে প্রকাশ করা হলো৷
স্টিফেন হকিং: বিজ্ঞানের কোন প্রশ্নটি তোমাকে ভাবিয়ে তোলে এবং কেন? আমি মাধ্যাকর্ষণ ও অন্যান্য চাপ সম্পর্কে একক একটা তত্ত্ব সম্পর্কে জানতে বেশ আগ্রহী৷
মার্ক জাকারবার্গ: আমি মানুষ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর জানতে আগ্রহী—কী আমাদের চিরজীবী করে তুলবে, কীভাবে সব রোগের আরোগ্য পাওয়া যাবে, কীভাবে মস্তিষ্ক কাজ করে, কীভাবে মানুষ কাজ করতে শেখে এবং কীভাবে তারা আরও বেশি শিখতে পারবে৷ আমাদের সামাজিক সম্পর্কে কী এবং কার প্রতি আমরা বেশি যত্নশীল, তা নির্ধারণ করে এমন কোনো গাণিতিক সূত্র সম্পর্কে জানতেও আমি আগ্রহী৷
আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার: পোপ ও প্রেসিডেন্ট যদি শারীরিক ব্যায়ামের জন্য সময় পান, তবে সবারই সে জন্য সময় থাকা উচিত৷ মার্ক, তুমি হয়তো এই গ্রহের অন্যতম ব্যস্ত মানুষ এবং তরুণ প্রজন্মের অনেক বেশি কাছের, তুমি কীভাবে ব্যায়ামের জন্য সময় বের করো এবং কী ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলো?
আরেকটি প্রশ্ন, যন্ত্র কি জিতবে (মানুষের বিপক্ষে)?
মার্ক জাকারবার্গ: যেকোনো কাজেই শক্তির দরকার এবং সুস্বাস্থ্য নিঃসন্দেহে মানুষকে কাজে বেশি শক্তি জোগায়৷ আমি সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যায়াম করি, সাধারণত সকালে ঘুম থেকে জেগেই৷ আর উপরি পাওনা হিসেবে মাঝেমধ্যে আমার পোষা কুকুরের সঙ্গে দৌড়াতে বের হই৷
না, যন্ত্র জিতবে না৷
জো বায়ার: ফেসবুকে বেতন হিসেবে কেন তুমি ১ ডলার নাও?
মার্ক জাকারবার্গ: আমি যথেষ্ট অর্থ উপার্জন করেছি৷ আমার যা আছে, তা-ই নিয়ে সবার ভালোর জন্য কাজ করে যেতে চাই৷ ফেসবুকের মাধ্যমে পৃথিবীর মানুষকে আরও কাছে নিয়ে আসতে চাই৷ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক দাতব্য কাজেও আগ্রহী৷ প্রতিদিন বিনা কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়৷ অনেক সমস্যার সমাধান দরকার এবং আমি সৌভাগ্যবান যে অন্তত তার কিছুটা হলেও সমাধান করার সুযোগ পেয়েছি৷
মার্সেল রিউকেলটুকেল: ফেসবুকের ভবিষ্যৎ কী?
মার্ক জাকারবার্গ: মানুষের যোগাযোগের ধরনে কিছু ধারা আছে, যা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে৷ প্রথমত, মানুষ ভাব প্রকাশের নানা মাধ্যম খুঁজে বের করছে৷ আমরা আগে শুধু লিখে ভাব প্রকাশ করতাম, এখন ছবি পোস্ট করি৷ কিছুদিনের মধ্যে ভিডিও বার্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে৷ এরপর আসবে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি৷ আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে আমরা চাইলেই আমাদের চিন্তাভাবনা, আবেগ-অনুভূতি পর্যন্ত বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারব৷
দ্বিতীয়ত, আগে যোগাযোগের জন্য সশরীরে উপস্থিত থাকতে হতো৷ পরবর্তী সময়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের উদ্ভাবিত হয়৷ ভবিষ্যতে অগমেন্টেড রিয়ালিটি এবং অন্যান্য যন্ত্রের মাধ্যমে সব সময় যুক্ত থাকার পথ বেরিয়ে আসবে৷
বেন রমবার্গ: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ফেসবুকের কাজ সম্পর্কে আমাদের কিছু বলো।
মার্ক জাকারবার্গ: মানুষ কী শেয়ার করে, তা জানাই আমাদের গবেষণার মূল লক্ষ্য৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তুমি যদি তোমার বন্ধুর সঙ্গে কোনো ছবি তোলো, তবে তা যেন সেই বন্ধুর কাছে পৌঁছে যায়, কিংবা রাজনীতি নিয়ে কিছু লিখলে সেই বিষয়ে আগ্রহীরা যেন তা দেখতে পায়, তা নিয়ে কাজ করছি৷ দৃষ্টি ও শ্রবণেন্দ্রিয় ক্ষমতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হয়তো ভালো কাজ করবে৷ যেমন ছবি ও ভিডিওতে যা কিছু আছে, তার সবকিছুই বোঝার মতো একটা সিস্টেম আমাদের তৈরি করতে হবে৷ ভাষার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে৷ খুবই সাধারণ করে বলতে গেলে ব্যাপারটা এমনই৷
জেনিফার লিন্ডসে প্রোভান: আমার ১০ বছর বয়সী মেয়ে জানতে চায়, যদি কখনো তুমি মনুষ্যবিহীন কোনো দ্বীপে যাও, তবে কোন তিনটি জিনিস সঙ্গে নেবে?
মার্ক জাকারবার্গ: আমার স্ত্রী, পোষা কুকুর ও মোবাইল ফোন৷
জেফ জার্ভিস: মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দিতে ফেসবুকের ভূমিকা কী? ভালো সাংবাদিকতাকে উৎসাহ দিতে ‘ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল’ সুবিধাটি দেখে বেশ ভালো লেগেছে৷ এরপর কী আসছে?
মার্ক জাকারবার্গ: ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি৷ কোনো খবর ব্রাউজারে লোড হতে সময় নিলে মানুষ সাধারণত তা না পড়েই ফিরে আসে৷ ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সে সময় কমিয়ে এনেছে৷ পরবর্তী সময়ে এর আরও উন্নয়ন করব আমরা৷
অদ্ভুত কিছু প্রশ্নও ছিল। যেমন ফেসবুকের ভবিষ্যৎ এমনকি মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন। সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি। সবশেষে তিনি লেখেন, ‘একই জায়গায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এবং তাঁদের প্রশ্ন দেখে ভালো লাগছে। পরবর্তী টাউনহল প্রশ্নোত্তর পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।’
0 Comment:
আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখককে ভালো কিছু লিখার অনুপ্ররেনা যোগাই তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত জানাতে ভুলবেন না । তবে বন্ধুরা এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করবেন না যার ফলে লেখকের মনে আঘাত হানে ! কারণ একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপ্ররেনা জাগাই !!